IQNA

ইসলামের সাথে অজ্ঞতা ও পশ্চাতগামীতার লড়াই অব্যাহত রয়েছে: সর্বোচ্চ নেতা

22:49 - May 05, 2016
সংবাদ: 2600726
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের রাহবার হযরত আয়াতুল্লাহ আল উযমা সাইয়েদ আলী খামেনেয়ী বলেছেন, রাসূলুল্লাহর (সা.) রেসালাতের মাধ্যমে জাহেলি যুগে ইসলাম ও অজ্ঞতার মধ্যে যে লড়াই শুরু হয়েছিলো, তা আজও অব্যাহত রয়েছে। অবশ্য বর্তমানে এ অবস্থা আরও জটিল আকার ধারণ করেছে, কেননা আজ একশ্রেণীর মুসলমান নামধারী গোষ্ঠী ইসলামের নামে উগ্রতা ও হিংস্রার বিস্তার ঘটাচ্ছে। এরাই আজ ইসলামের সবচেয়ে বড় শত্রু।


বার্তা সংস্থা ইকনা: হযরত আয়াতুল্লাহ আল উযমা সাইয়েদ আলী খামেনেয়ী আজ ২৭শে রজব বৃহস্পতিবার রাসূলের (সা.) বে'সাত তথা নবুয়্যাত ঘোষণা দিবস উপলক্ষে এক বিশাল সভায় বক্তৃতাকালে বলেন: বর্তমান বিশ্ব-ব্যবস্থা হচ্ছে এক শয়তানি ব্যবস্থা যা নিয়ন্ত্রণ করছে ইহুদিবাদীরা। ইহুদিবাদী পুঁজিপতি চক্রের আধিপত্যই বিশ্বের বর্তমান সংকটগুলোর কারণ এবং এই চক্র আমেরিকাকে নিয়ন্ত্রণ করছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আরও বলেছেন, তার দেশ কখনও যুদ্ধ শুরু করেনি ও ভবিষ্যতেও করবে না, তবে তার নীতি-অবস্থান জোরালো কণ্ঠে তুলে ধরবে।

তিনি আরও বলেছেন, মার্কিন সরকারের নেতৃত্বাধীন জাহেলিয়্যাত বা অজ্ঞতার ধারাকে মোকাবেলা করাই বর্তমানে মুসলিম উম্মাহর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব।

তিনি আজ বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সা)’র রিসালাতের দায়িত্ব লাভের বার্ষিকী উপলক্ষে ইরানি কর্মকর্তা, শহীদ পরিবারগুলোর একদল সদস্য ও বিদেশী কূটনীতিকদের এক সমাবেশে এই মন্তব্য করেছেন।

তিনি বলেছেন, মার্কিন সরকার বর্তমানে ইসলাম, ইরান ও শিয়া মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে। অন্যদিকে ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান বিশ্বনবীর (সা’)র দাওয়াতি মিশন তথা ইসলামী আন্দোলনের অগ্র-বাহিনী হিসেবে মার্কিন নেতৃত্বাধীন অজ্ঞতার মোকাবেলায় নেতৃত্ব দিচ্ছে। আর পরাশক্তিগুলোর কোনও পরোয়া না করেই ইরান এই আন্দোলন অব্যাহত রাখবে। মরহুম ইমাম খোমেনী বিশ্বনবীর (সা) সেই খাঁটি ইসলামী ধারার আলোকেই ইরানের এই অগ্রযাত্রা শুরু করেছিলেন বলে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা ইঙ্গিত করেন। 

তিনি বলেছেন, 'মার্কিন নেতারা ইরানকে তাদের নীতির পথে বাধা হিসেবে দেখছে। সম্প্রতি মার্কিন কর্মকর্তারা বলেছেন, ইরানের নীতির কারণেই দেশটির ওপর নিষেধাজ্ঞা ও সংঘাত চাপানো হয়েছে। এর অর্থ হে ইরানি জাতি তোমরা সচেতন ও সতর্ক, এই পথ থেকে ফিরে গিয়ে তোমাদেরকে আমাদের জন্য কাজ করতে হবে!- আর এটাই হচ্ছে অজ্ঞতা। এটা ঠিক ইসলাম-পূর্ব যুগের আরবদের জাহিলিয়্যাত বা অজ্ঞতা ও বর্বরতাপূর্ণ দিনগুলোর অবস্থার মতই।' 

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেছেন, তার দেশের বিরুদ্ধে নানা নিষেধাজ্ঞার মার্কিন হুমকির কারণ হল ইসলামী এই দেশটি আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী নীতি এবং বিশ্ব-শক্তিগুলোর অসৎ তৎপরতার বিরোধী।

এটা স্পষ্ট মার্কিন নেতৃত্বাধীন অজ্ঞতার ধারা মোকাবেলায় ইরানের সঙ্গে যোগ দেয়া মুসলিম দেশগুলোর জন্য সবচেয়ে বড় দায়িত্ব বলে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা যে মন্তব্য করেছেন তা বিশেষভাবে গুরুত্ব পাওয়ার দাবি রাখে। তিনি মুসলমানদের মধ্যে আত্ম-বিশ্বাসের চেতনা জাগিয়ে তুলে আরও বলেছেন, ইরানের সংগ্রামী ইসলামী ব্যবস্থা আগের চেয়েও শক্তিশালী হয়েছে এবং তা অবশ্যই বিজয়ী হবে। ইসলাম ও মুসলমানদের চূড়ান্ত বিজয় অনিবার্য বলেও তিনি মত প্রকাশ করেছেন একই ভাষণে। 

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা এটাও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন যে তাকফিরি-ওয়াহাবি গোষ্ঠীগুলো সবচেয়ে বর্বর ও কুৎসিত নানা অপরাধ করে যাচ্ছে ইসলামের নামে এবং তাদের সহায়তা দিচ্ছে পশ্চিমা শক্তিগুলো। 

তিনি বলেন, পশ্চিমা শক্তিগুলো মুখে দায়েশ তথা আইএসআইএল-এর বিরুদ্ধে জোট গঠনের কথা বললেও বাস্তবে তারাই এই ধারার জন্মদাতা এবং ইসলামের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অংশ হিসেবেই তারা এটা করছে। ইসলামের সুনাম ক্ষুন্ন করার জন্যই তারা ‘ইসলামিক স্টেট’ বা ‘ইসলামী রাষ্ট্র’ শব্দটি ব্যবহার করছে বলে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা স্মরণ করিয়ে দেন। 

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আজকের এই ভাষণে আরও বলেছেন, বর্তমান বিশ্ব-ব্যবস্থা হচ্ছে এক শয়তানি-ব্যবস্থা যা নিয়ন্ত্রণ করছে ইহুদিবাদীরা। ইহুদিবাদী পুঁজিপতি চক্রের আধিপত্যই বিশ্বের বর্তমান সংকটগুলোর কারণ এবং এই চক্র আমেরিকাকে নিয়ন্ত্রণ করছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন। এই ইহুদিবাদী চক্রের সঙ্গে যোগসাজশ ও সমন্বয় করা ছাড়া আমেরিকার কোনও দল বা গোষ্ঠী ক্ষমতায় যেতে পারে না বলে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা উল্লেখ করেছেন। 

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আরও বলেছেন, তার দেশ কখনও যুদ্ধ শুরু করেনি ও ভবিষ্যতেও করবে না, তবে তার নীতি-অবস্থান জোরালো কণ্ঠে তুলে ধরছে এবং ভবিষ্যতেও তুলে ধরবে। #

iqna


captcha