IQNA

অজ্ঞতা পরিহারে কুরআনের তাগিদ

0:02 - October 08, 2022
সংবাদ: 3472601
তেহরান (ইকনা): অজ্ঞতা মানুষের জন্য একটি অপ্রীতিকর বৈশিষ্ট্য হিসাবে বিবেচিত হয়, এমন একটি বৈশিষ্ট্য যা শুধুমাত্র নিজের সমস্যা এবং ক্ষতির কারণ হয় না, বরং কখনও কখনও এটি অন্য গোষ্ঠী বা মানুষকে বিপথগামী ও ধ্বংসের দিকে নিয়ে যেতে পারে, তাই বিবেকবান মানুষ জাহেল ও অজ্ঞ লোকদের এড়িয়ে চলার চেষ্টা করে। 
"অজ্ঞতা"র বিভিন্ন অর্থ রয়েছে, যেমন জ্ঞান ও সচেতনতার মোকাবেলায় দাঁড়ানো, অমনোযোগিতা। ইসলাম মুমিনদেরকে অজ্ঞতা থেকে দূরে থাকার আহ্বান জানিয়েছে এবং জাহেলিয়াতের ক্ষতিকর প্রভাব বর্ণনা করেছে।
যদিও কেউ কেউ জ্ঞানের প্রতি অমনোযোগিতা এবং নিরক্ষরতাকে অজ্ঞতার মূল বলে মনে করেন, কিন্তু পবিত্র কুরআনে অজ্ঞতার বেশ কিছু কারণ উল্লেখ করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে:
وَإِلَّا تَصْرِفْ عَنِّي كَيْدَهُنَّ أَصْبُ إِلَيْهِنَّ وَأَكُنْ مِنَ الْجَاهِلِينَ
যদি তুমি আমাকে তাদের ছলনা থেকে উদ্ধার না কর, তবে আমি তাদের প্রতি আকৃষ্ট হতে পারি এবং আমি অজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত হতে পারি।’
সূরা ইউসূফ, আয়াত: ৩৩। 
এই আয়াতে, যা হযরত ইউসূফ (আ.) থেকে উদ্ধৃত হয়েছে, পাপ একজন ব্যক্তির উপর কর্তৃত্ব করার জন্য অজ্ঞতার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। হযরত ইউসূফের (আ.) ভাইদের কাহিনী কুরআনে উল্লেখ আছে: 
قَالَ هَلْ عَلِمْتُمْ مَا فَعَلْتُمْ بِيُوسُفَ وَأَخِيهِ إِذْ أَنْتُمْ جَاهِلُونَ
সে (ইউসূফ) বলল, ‘তোমরা কি অবগত আছ যে, তোমরা ইউসূফ ও তার সহোদরের প্রতি কীরূপ আচরণ করেছ, যখন তোমরা অজ্ঞ (অসচেতন) ছিলে?’
সূরা ইউসূফ, আয়াত: ৮৯। 
অজ্ঞতা ইচ্ছা এবং এক ধরনের অমনোযোগ দ্বারা সৃষ্ট হয়। এক জন  ব্যক্তি আলেম হলেও তার জ্ঞান বা আচরণের পরিণতির দিকে মনোযোগ না দিলে সে অজ্ঞ।
এমনকি অনৈতিকতাও অজ্ঞতার কারণ। যেমন, অন্যকে নিয়ে ঠাট্টা করা অজ্ঞতার অন্যতম লক্ষণ:
وَإِذْ قَالَ مُوسَى لِقَوْمِهِ إِنَّ اللَّهَ يَأْمُرُكُمْ أَنْ تَذْبَحُوا بَقَرَةً قَالُوا أَتَتَّخِذُنَا هُزُوًا قَالَ أَعُوذُ بِاللَّهِ أَنْ أَكُونَ مِنَ الْجَاهِلِينَ
(স্মরণ কর) যখন মূসা নিজ সম্প্রদায়কে বলেছিল, ‘নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের একটি গাভী যবেহ করার আদেশ দিয়েছেন,’ তারা বলল, ‘তুমি কি আমাদের উপহাস করছ?’ সে (মূসা) বলল, ‘আমি আল্লাহর আশ্রয় কামনা করছি যাতে অজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত না হই।’
সূরা বাকারা, আয়াত: ৬৭। 
অজ্ঞতা মানুষের চিন্তা ও ব্যক্তিত্বের বৃদ্ধি এবং বিকাশের একটি বাধা, তাই অজ্ঞতা এড়ানোর জন্য অনেক সুপারিশ রয়েছে; পবিত্র কুরআনে অজ্ঞতার ধ্বংসাত্মক প্রভাব থেকে নিরাপদ থাকার সুপারিশ রয়েছে, উদাহরণস্বরূপ, সূরা আল-হুজরাতের 6 নং আয়াতে বলা হয়েছে:
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِنْ جَاءَكُمْ فَاسِقٌ بِنَبَإٍ فَتَبَيَّنُوا أَنْ تُصِيبُوا قَوْمًا بِجَهَالَةٍ فَتُصْبِحُوا عَلَى مَا فَعَلْتُمْ نَادِمِينَ
হে ঈমানদারগণ! যদি কোন পাপাচারী ব্যক্তি তোমাদের কাছে কোন সংবাদ আনয়ন করে, তবে তোমরা পরীক্ষা করে দেখবে, যাতে অজ্ঞতাবশত: তোমরা কোন সম্প্রদায়ের ক্ষতিসাধনে প্রবৃত্ত না হও এবং পরে নিজেদের কৃতকর্মের জন্যে অনুতপ্ত না হও। 
সূরা হুজুরাত আয়াত: ৬।
জ্ঞানী লোকদের জিজ্ঞাসা করা মানুষকে অজ্ঞতা থেকে বাঁচানোর আরেকটি উপায়
فَاسْأَلُوا أَهْلَ الذِّكْرِ إِنْ كُنْتُمْ لَا تَعْلَمُونَ
যদি তোমরা না জেনে থাক তবে যারা জানে তাদের জিজ্ঞেস কর।
সূরা নাহল, আয়াত: ৪৩। 
নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে জ্ঞানী ও বিজ্ঞ লোকদের জিজ্ঞাসা করা একটি বুদ্ধিমানের কাজ এবং মানুষকে অজ্ঞতা, জাহেল ও অসাবধানতা থেকে দূরে রাখে।
 
captcha