IQNA

নিরাপত্তা সঙ্কটে রোহিঙ্গারা: হিউম্যান রাইটস ওয়াচ

13:05 - October 06, 2021
সংবাদ: 3470775
তেহরান (ইকনা): কক্সবাজার কুতুপালং ক্যাম্পে রোহিঙ্গারা যে সঙ্কটময় দিন কাটাচ্ছে তা প্রতিরোধে বাংলাদেশ ও জাতিসংঘের দ্রুত জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া উচিত বলে জানিয়েছে  মানবধিকার সংস্থা হিউম্যন রাইটস ওয়াচ। এ বিষয়ে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের নেতা ও স্বেচ্ছাসেবকরা বলেন, জঙ্গিরা তাদের লক্ষ্য করে অবৈধভাবে জুলুম চালাচ্ছে।
সম্প্রতি সেপ্টেম্বরের ২৯ তারিখ রোহিঙ্গা নেতা মহিবুল্লাকে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। তার সহযোগীরা জানায়, এর আগে মহিবুল্লাকে একাধিকবার হুমকি দেওয়া হয় কিন্তু পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে না কতৃপক্ষ।
 
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের দক্ষিণ এশিয়ার পরিচালক মিনাক্ষী গাঙ্গুলি বলছেন, ‘কুতুপালং ক্যাম্প থেকে যেমন মহিবুল্লাকে হত্যা করা হয়েছে প্রতিদিনই তেমন ঝুঁকিতে থাকে রোহিঙ্গারা।’ এ বিষয়ে আন্তজার্তিক সহায়তার মাধ্যমে বাংলাদেশকে খুব দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান তিনি।
 
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ মহিবুল্লার পরিবারের সদস্যসহ নয় জন রোহিঙ্গার সাক্ষাৎকার নিয়েছে, যারা বলেছে  কর্তৃপক্ষ মহিব উল্লাহর বিষয়টি ভালোভাবে আমলে নেয়নি,তদন্তও করেনি এবং সুরক্ষাও দেয়নি। তাদের দাবি, বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গা শিবিরে অনেক নিরাপত্তা কর্মী মোতায়েন করেছে, কিন্তু তারা শরণার্থীদের রক্ষা করার পরিবর্তে তাদের দমন ও নিয়ন্ত্রণে ব্যস্ত। রোহিঙ্গা ইস্যুতে নিরাপত্তা নিশ্চিতে বাংলাদেশসহ জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের এগিয়ে আসা উচিত বলে মন্তব্য করেন তারা।  মানবধিকার সংস্থার কর্মীরা বলেন, ক্যাম্পের ভিতরের অবস্থা দিন দিন ভয়াবহ হচ্ছে।
 
বাংলাদেশের বসবাসরত ১০ লাখ রোহিঙ্গার নেতা ছিলেন মহিবুল্লাহ। জাতিসংঘের মানবধিকার সংস্থার দেওয়া তথ্য মতে,  ২০১৯ সালে তাকে একবার মৃত্যুর হুমকি দেওয়া হয়।  মৃত্যুর একমাস আগে মহিবুল্লাহ ওই হুমকি নিয়ে তার পরিবারের কাছে মুখ খোলে। আগস্ট মাসে, তিনি বাংলাদেশ সরকারের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কাছে একটি চিঠি পাঠান। এদিকে বাংলাদেশের এক পুলিশ কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছে,মহিবুল্লাহকে হুমকি দেওয়া নিয়ে তারা কোন চিঠি হাতে পাইনি।
 
সম্প্রতি চলতি মাসের ৩ তারিখে মহিবুল্লাহ হত্যার সাথে জড়িত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।  মহিবুল্লার সহযোগী একজন জানান, ‘ওইদিনই সকালে কয়েকজন মানুষ আমার বাড়িতে যায় এবং আমার পরিবারকে হুমকি দিয়ে বলে, আমাকে প্রস্তুত হবে, মহিবুল্লার মত আমারও একই পরিণতি হবে।  এই কথা ক্যাম্প ইন চার্জকে জানানোর পর তারা নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে কিন্তু আমি চিন্তিত কারণ পুলিশ সবসময় থাকে না।’
 
আরাকান রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মি মুসলিম রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি  খ্রিস্টান ও হিন্দুদের ওপর আক্রমণ করছে। সেই সাথে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কর্মরত নারীদেরকে লক্ষ্য করছে তারা।
 
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলছে, বাংলাদেশের উচিত ইউএনএইচসিআরের সহযোগিতা নিয়ে মহিব উল্লাহর হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত  সকলের পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করা ও  অবিলম্বে রোহিঙ্গাদের সুরক্ষার বিষয় নিশ্চিত করা ।
কালের কণ্ঠ
captcha