ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মুস্তফা আল-কাযেমি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর স্বাস্থ্যমন্ত্রী হাসান আল-তামিমিকে বরখাস্ত করেছেন। প্রধানমন্ত্রী এই ঘটনায় নিহতদের শহীদ বলে অবিহিতে করে তিন দিনের জাতীয় শোকও ঘোষণা করেছেন।
নগরীর ইমাম হুসেইন হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ড থেকে সোমবার রাতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত রোগীদের জন্য ওই ওয়ার্ড ব্যবহৃত হচ্ছিল। একটি অক্সিজেন সিলিন্ডারে বিস্ফোরণ থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়ে বলে প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে।
ইরাকের কোনো কোনো গণমাধ্যম জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে পাঁচজন মেডিক্যাল স্টাফ, দু’জন নার্স, তিন নারী এবং ইরাকি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কয়েকজন কর্মী রয়েছে।
এখনো বহু মানুষ হাসপাতালের ভেতরে আটকা পড়ে আছে বলে মৃতের সংখ্যা ১০০ বা তার চেয়ে বেশি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ইরাকি প্রধানমন্ত্রী মুস্তফা আল-কাজিমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে নাসিরিয়া ছুটে গেছেন এবং সেখানে তিনি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেছেন। পার্লামেন্ট স্পিকার মোহাম্মাদ আল-হালবুসি এক টুইটার বার্তায় জানিয়েছেন, তিনিও মঙ্গলবার নাসিরিয়ার হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের বিষয়ে একই ধরনের বৈঠক করবেন।
চলতি বছরের শুরুর দিকে ইরাকের রাজধানী বাগদাদের ইবনে খতিব হাসপাতালে এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১১০ ব্যক্তির প্রাণহানি হয়েছিল।
এদিকে এই হাসপাতালের অগ্নিকাণ্ডের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে ইরাকি পার্লামেন্টের স্পিকার মোহাম্মদ আল-হালবোসি বলেন: ইমাম হুসেইন হাসপাতালে আগুন বিপর্যয়ের ফলে অনেক ইরাকিদের জীবন অকপটে ঝড়ে গিয়েছে। আর এটি আমাদের ব্যর্থতার একটি স্পষ্ট লক্ষণ। এখন এ জাতীয় বিপর্যয়কর ব্যর্থতা বন্ধ করার সময় এসেছে। সংসদে আজকের অধিবেশনে এ বিষয়টি বিবেচনা করবে।
বাসরা প্রদেশের ইরাকি সংসদের সদস্য ফালেহ আল-খাজালী নাসিরিয়ার এই হাসপাতালে আগুন লাগার ইস্যুতে মোস্তাফা আল কাযিমি সরকাররে কার্যক্রমের সমালোচনা করে বলেছেন: "মোস্তফা আল-কাযেমি ব্যক্তিগতভাবে নাসিরিয়ার বিষয়টি পরিচালনা করছেন। এই ঘটনার জন্য তিনি নিজ মূল অপরাধী।
তিনি আরও যোগ করেছেন: "কাজেমী সরকার ২৫টি হাসপাতালের সমস্যা সমাধানে ব্যর্থ হয়েছে এবং এ ব্যাপারে যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে তা কাল্পনিক ছিল।" কিছু গভর্নর স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিকে দলীয় এবং যাযাবর কেন্দ্রে পরিণত করেছেন এবং এই কেন্দ্রগুলিতে বৈজ্ঞানিক মান দেখা যায় না।
তিনি বলেছেন: দ্রুত তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে এবং নাসিরিয়াহ হাসপাতালে এই ট্র্যাজেডির কারণ নির্ধারণ করতে হবে।
এদিকে ইরাকের জ্বিক্বার স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, নাসিরিয়াহ শহরের ইমাম হুসেইন হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯২।
এই অগ্নিকাণ্ডকে কেন্দ্র করে জ্বিকার প্রদেশের আদালত এই প্রদেশের স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধানসহ ১৩ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে।
ভ্যাটিকান ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বার্তায় পোপ ফ্রান্সিস কার্ডিনাল পিটার পারোলিনের মাধ্যমে প্রেরিত বার্তায় ইমাম হুসেইন হাসপাতালে আগুনে হতাহত সকলের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। iqna