বার্তা সংস্থা ইকনা: সুতরাং, একজন শিক্ষিত, স্বাধীনচেতা ও বিভিন্ন দেশে ভ্রমণের অভিজ্ঞতা থাকা অস্ট্রেলীয় নারী হিসেবে আমার ইসলামে ধর্মান্তরের বিষয়টি আসলেই কি ব্যাপকভাবে পশ্চাদমুখী?
আমি আমার উজ্জ্বল চামড়া ও দীপ্ত চোখের চেহারায় বিভ্রান্ত হতাম। অনেক অস্ট্রেলিয়ান জিজ্ঞাসা করত যে আমি কোন দেশ থেকে এসেছি- আমি একজন অস্ট্রেলিয়ান এবং মুসলিম- তা শুনে তারা আশ্চর্য হতো। অস্ট্রেলিয়ান ও মুসলিম-এই সংমিশ্রণ এখনো অনেকের কাছেই অবিশ্বাস্য।
ইসলামে ধর্মান্তরের কাজটি খুব সহজ নয়। ইসলাম গ্রহণের কারণে আমাকে নানা রকম বাজে গালি শুনতে হয়েছে, আমাকে অত্যন্ত গভীরভাবে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পরীক্ষা করা হয়েছে, চাকরি থেকে প্রত্যাখ্যাত এবং বরখাস্ত করা হয়েছে, বন্ধুদের হারিয়েছি এবং আমার পরিবারের সঙ্গে সত্যিই একটি কঠিন সময় কাটিয়েছি।
কারো কারো অনুমান ছিল আমি ভালবাসার মানুষের জন্য ধর্মান্তরিত হয়েছি। আমার বিশ্বাসের পরিবর্তন সম্পর্কে চারদিকে কঠোর এবং অভদ্র মন্তব্য সত্ত্বেও, এমন অনেক মানুষ ছিল যারা আমার কাছে এসে জানতে চেয়েছে- কেন আমি ধর্মান্তরিত হলাম? এই ধরনের প্রশ্নের উত্তর আমি অত্যন্ত খুশি মনেই তাদের দিয়েছি এবং দিই।
আমার ইসলামে ধর্মান্তরের পিছনে মূলত তিনটি বিষয় কাজ করেছে। এটিই হচ্ছে আমার দুই বছরের বিশ্বাসের যাত্রার ফসল।
মালয়েশিয়া সফর
মালয়েশিয়া সফর স্পষ্টতই আমার ইসলামে ধর্মান্তরের মূল ভিত্তি ছিল। আমি সেখানে গিয়েছিলাম শুধুই খেয়ালের বশবর্তী হয়ে নয়। ইন্টার্নি সম্পন্ন করাই ছিল মূল উদ্দেশ্য। ধর্মান্তরের মতো সাহসী পদক্ষেপ নেয়ার কোনো পরিকল্পনা আমার ভিতর ছিল না। আমি সেখানে আমার সান্ত্বনার ক্ষেত্র খুঁজে পেয়েছিলাম; যা আমার অস্ট্রেলিয়ান ছোট শহর ‘গিপসল্যান্ডে’ কখনো পাইনি।
মালয়েশিয়ায় আসার আগে আমি ইসলাম সম্পর্কে কিছুই জানতাম না। এমনকি এর আগে আমি কখনোই কোনো মুসলিমের সঙ্গে সাক্ষাৎ করিনি। আমি সবসময় মনে করতাম মুসলিম মানেই মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে মুসলিম নারীরা লম্বা কালো পোশাক (বোরখা) পরিধান করে থাকে এবং তারা সভ্যতা থেকে অনেক অনেক দূরে অবস্থান করছে।
আমি মনে করতাম মুসলমান নারীরা অত্যাচারিত ও নিপীড়িত। তারা তাদের স্বামী ছাড়া কোথাও যেতে পারে না, তারা পড়া-লেখা বা চাকরির জন্য বাইরে যেতে পারে না এবং সব সময় কালো পোশাক পরে থাকতে হয়।
মালয়েশিয়ায় আসার পর ইসলাম নিয়ে আমার পুরো দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টে যায়। দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় এই দেশটির মুসলিম মেয়েদের মাথায় তাদের রঙিন হিজাব ও জামাকাপড় আমাকে আগ্রহী করে তুলে। এখানে অনেক মুসলিম তরুণ-তরুণীর সঙ্গে আমার বন্ধুত্ব হয়; যারা শিক্ষা অর্জনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে যেত এবং চাকরি করত। তাদের মধ্যে অনেকেই হিজাব পরত। হিজাবে তাদেরকে কখনো অসন্তষ্ট মনে হয়নি এবং তারা তাদের ধর্মকে খুবই ভালোবাসতো। এসব বিষয় আমাকে ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে জানতে আগ্রহী করে তুলে।
ইসলামে মুসলিম নারীর অধিকার সম্পর্কে আমি একটি প্রবন্ধ পড়ি। সাংবাদিকতার একজন ছাত্রী হিসেবে প্রবন্ধটি আমার মন ও চোখকে খুলে দেয় এবং এটাই ছিল আমার সবকিছুর শুরু।
আমার মন হঠাৎ করেই ইসলাম সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করার জন্য উদ্বেলিত হয়ে ওঠে। প্রকৃত সত্য যে ইসলাম নারীদের অনেক বেশি অধিকার দিয়েছে।
ইসলামে নারীদের বিবাহবিচ্ছেদ, সম্পত্তির অধিকার, আর্থিক অধিকার এবং নিজের পছন্দ অনুযায়ী বিয়ের অধিকারসহ নানা অধিকার প্রদান করেছে এবং এই অধিকারসমূহ পশ্চিমা নারীদের চেয়ে শত শত বছর আগেই কুরআন ও হাদীসে মুসলমান নারীদের দেয়া হয়েছে।
প্রথমবারের মতো আমি মালয়েশিয়ায় একটি মসজিদে প্রবেশ করি। মসজিদে প্রবেশ করা মাত্রই আমি আমার অন্তরে শান্তির অনুভূতি অনুভব করলাম। আজানের সুমধুর ধ্বনি আমার অনুভূতিকে নাড়িয়ে দেয়। এমন অনুভূতি এর আগে আমি কখনো বুঝতে পারিনি।
আমি মালয়েশিয়ায় ইসলামে ধর্মান্তরিত হয়নি। আমি এজন্য এক বছরেরও বেশি সময় নিয়েছি। তবে, মালয়েশিয়া সফরই আমাকে ইসলামের পথে এবং এক আল্লাহকে পাবার পথ দেখিয়েছে।
খ্রিস্টধর্ম
ইসলামে ধর্মান্তরিত হওয়ার আগে আমি ছিলাম একজন কট্টর খ্রিস্টান। একজন খ্রিস্টান হিসাবে আমার বিশ্বাসের যাত্রায় এটি ছিল একটি ফোকাল পয়েন্ট; এটি ছাড়া আমি মুসলিম হতে পারতাম না এবং যিশু খ্রিস্টের জন্য রয়েছে আমার ভালবাসা; কেননা এটিই আমাকে ইসলামের দিকে পরিচালিত করেছে।
খ্রিস্টধর্ম প্রকৃতপক্ষে ইসলামের অত্যন্ত কাছাকাছি একটি ধর্ম। এটি কেবল তাত্ত্বিক দিক দিয়েই নয়, বরং ঐতিহাসিকভাবে অনেক মিল রয়েছে। খ্রিস্টান ধর্ম সম্পর্কে ইসলাম যা শিক্ষা দেয় সে সম্পর্কে অনেক ভুল ধারণা রয়েছে। খ্রিস্টানদের সঙ্গে মুসলমানদের আচরণ কেমন হওয়া উচিত- সেসম্পর্কে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) দিক নির্দেশনা দিয়ে গেছেন। আমরা খ্রিস্টানদের প্রতি সম্মান দেখাতে চাই। এমনকি যদি একজন মুসলিম পুরুষ একজন খ্রিস্টান নারীকে বিয়ে করেন, তবে ওই নারীকে তার নিজ ধর্মের উপাসনা চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ দেয়া উচিৎ।
খ্রিস্টান এবং ইহুদিদের সম্পর্কে কোরআনের অনেক স্থানে উল্লেখ রয়েছে, কারণ আমাদের সকলের একই ‘আব্রাহামিক’ (মুসা) শিকড় রয়েছে। পবিত্র কোরআন মাজীদে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) -এর চেয়ে যিশুর নামটি অনেক বেশি উল্লেখ করা হয়েছে। মুসলিমরা এখনো কুমারী মরিয়মের সন্তান জন্মদানের ওপর বিশ্বাস রাখে এবং তার প্রতি গুরুত্ব দেয়। ঈসা (আঃ) একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব এবং আপনি ঈসা (আঃ) এর জীবন ও কাজের প্রতি বিশ্বাস না রেখে একজন মুসলিম হতে পারেন না।
খ্রিস্টান ও মুসলমানদের মধ্যে একমাত্র পার্থক্য হল যে আমরা ঈসা (আঃ) কে একজন নবী হিসেবে গন্য করি এবং আল্লাহর পাশে তার উপাসনা করি না। ইসলামে এক আল্লাহর একত্বকে শিক্ষা দেয় এবং শুধুমাত্র আল্লাহরই উপাসনা করে এবং আমরা বিশ্বাস করি যে ঈসা (আঃ) তার নিজেকে এভাবেই শিক্ষা দিয়েছেন। ‘আল্লাহ’ শব্দটি আরবি শব্দ থেকে এসেছে এবং এটি কেবল একটি ইসলামি শব্দ নয়। আরব খ্রিস্টানরাও ঈশ্বরকে ‘আল্লাহ’ নামে ডাকে।
আমি খ্রিস্টধর্মের বিভিন্ন দিককে ভালবাসি। খ্রিস্ট ধর্মের সমবেদনা, করুণা, ভালবাসার শিক্ষা এবং সমস্ত ভাল জিনিস; যা আমাদেরকে মানবিক হতে উৎসাহিত করে-তা আমি অকপটভাবে ভালোবাসি। এটা চমৎকার যে অনেক গীর্জা তাদের নিজ সম্প্রদায়ের মধ্যে অনেক বেশি সক্রিয় এবং তারা সমাজে ভাল কিছু করতে এবং অন্যদের সাহায্য করতে চান।
মালয়েশিয়া থেকে অস্ট্রেলিয়ায় ফেরার পর আমি নিজের মধ্যে কিছু একটা অনুপস্থিত অনুভব করলাম। আমি খ্রিস্টধর্মের মূল বিষয় এবং ভিত্তি অনুসন্ধান করতে থাকি। পল যা শিক্ষা দিয়েছেন তা নিয়ে গবেষণা করেছি। খ্রিষ্টের মৃত্যুর পরে বিভিন্ন ঐতিহাসিক নেতাদের কর্ম নিয়ে বিস্তর গবেষণা করেছি এবং বাইবেল পড়ে তার অন্তর্নিত অর্থ বুঝতে চেষ্টা করেছি।
বাইবেলে কি বলা হয়েছে তা নিয়ে আমি গবেষণা করেছি। বাইবেলের বিভিন্ন অসঙ্গতি এবং প্রকৃত সত্যগুলো বের করে আনার চেষ্টা করেছি। কোরআন ও বাইবেলের মধ্যে মিল রয়েছে। আমার খ্রিস্টীয় বিশ্বাস সম্পর্কে দীর্ঘ দিন ধরে মনের ভিতর ঘুরপাক খাওয়া অনেক প্রশ্নের উত্তর গবেষণা করতে গিয়ে কোরআনের মধ্যে পেয়েছি।
আমি কোরআনের মধ্যে কোনো ধরনের অসঙ্গতি ও ত্রুটি খুঁজে পাইনি। আমি বিশ্বের প্রখ্যাত বাইবেল ও কোরআনের পণ্ডিতদের মধ্যে যুক্তি-তর্ক শুনেছি এবং প্রতিবারই কোরআন আমার কাছে আরো বেশি বোধগম্য হয়েছে।
যাইহোক, ইসলাম যখন আমার কাছে সত্য বলে প্রমাণিত হলো, তখন আমার পক্ষে আসলেই খ্রিস্টধর্ম ত্যাগ করা খুবই কঠিন ছিল। ধর্ম সবসময়ই আমার জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে উঠেছে এবং আমি নিশ্চিত হতে চাইলাম যে, আমি আমার সমস্ত হৃদয়জুড়ে এবং সমস্ত সঠিক কারণগুলোকে বিবেচনায় নিয়ে ইসলামে ধর্মান্তরিত হচ্ছি।
ইসলামে ধর্মান্তরিত হওয়ার অর্থ আমার নির্দিষ্ট কিছু বাধ্যবাধকতা রয়েছে। আর তা হচ্ছে দিনে অন্তত পাঁচবার প্রার্থনা করা, বেশি বেশি করে দান করা, আরো বিনয়ী পোশাক পরিধান করা এবং মদ্যপান ত্যাগ করা। আমি ধীরে ধীরে এসব বিষয়ে নিজেকে খাপ খাইয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেই।
এটি একটি বিশাল পরিবর্তন; কেননা আমি যতটা সম্ভব গির্জার নিরাপদ আশ্রয়স্থল ছেড়ে যেতে চাইনি। খ্রিস্টধর্ম থেকে ইসলাম ব্যাপকভাবে ভিন্ন- এমন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আমি ইসলামে ধর্মান্তর হতে চাইনি। যাইহোক, অনেক কারণেই আমি ইসলামকে আমার বিশ্বাসের একটি আপডেট হিসেবে দেখতে চেয়েছি।
খ্রিস্টধর্ম আমাকে ঈশ্বরকে ভালবাসতে শিখিয়েছে। এটা আমাকে নম্রতা ও অন্যদের ভালবাসার শিক্ষা দিয়েছে এবং এটি আমাকে যিশু সম্পর্কে অনেক কিছু শিক্ষা দিয়েছে। আমি যদি একজন খ্রিস্টান না হতাম, তবে এখন আমি যা আছি তা হতে পারতাম না।
সাংবাদিকতা
একজন সাংবাদিক হওয়ার সবচেয়ে ভাল অংশ হচ্ছে এটি বিশ্বে কিছু পরিবর্তন আনতে সক্ষম হচ্ছে। মানুষকে সাহস যোগাতে, মানুষের সম্পর্কে জানতে এবং বিশ্বের চারপাশ সম্পর্কে শিখতে সাংবাদিকতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একজন সাংবাদিক হিসেবে এটি আমাকে ইসলাম সম্পর্কে জানতে আগ্রহী করেছে।
মুসলিম নারীদের অধিকার ও ইসলাম নিয়ে আমার দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন আনেন লেখক এবং নারীর অধিকার নিয়ে কাজ করা মেরিনা মাহাথির। ‘ইউ এন পার্সন অব দ্য ইয়ারে’ ভূষিত হওয়ায় মালয়েশিয়ায় আমি তার সাক্ষাতকার নিয়েছি।
আমার এখনো মনে আছে যখন আমি তার সাক্ষাৎকার নিচ্ছিলাম, তখন আমার হাতের তালু থেকে কিভাবে ঘাম ঝরছিল। আমার মাথার ভেতর শত শত ভাবনা ঘুরপাক খাচ্ছিল। ‘আমি কি যথেষ্ট ভাল?’, ‘আমি কি সত্যি সত্যি সাংবাদিকতাকে এড়িয়ে যাচ্ছি?’ এটি ছিল আমার প্রথমবারের মতো বিখ্যাত কোনো ব্যক্তির সাক্ষাত্কার গ্রহণ।
সাক্ষাতকার নেয়ার সময় মেরিনা মাহাথিরের আত্মবিশ্বাসী ও জোরালো ব্যক্তিত্ব আমাকে আভিভূত করে এবং আমি তাৎক্ষণিক আরাম বোধ করি। আমি জানতাম, সাক্ষাত্কার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়; যা মানুষের জীবনে পরিবর্তন নিয়ে আসতে পারে। মালয়েশিয়ায় আসার পর থেকে আমার নিজের ভিতরে জন্ম নেয়া অনেক প্রশ্নের জবাব তিনি দিয়েছেন। তার জ্ঞান সত্যিই প্রেরনাদায়ক এবং আমি অনুভব করলাম যে, বড় ও গভীর কিছু সম্পর্কে চিন্তার নতুন উপলব্ধি আমি পেয়েছি।
সাক্ষাতকারের শেষ পর্যায়ে মেরিনা বলেন, ‘এই পৃথিবীতে আমরা সবাই একই মানুষ।’ পিছন ফিরে তাকিয়ে এখন বুঝতে পারছি, এটি ছিল এ পর্যন্ত আমার শেখা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পাঠ। জাতীয় সীমানা, রাজনীতি, সংস্কৃতি, উপজাতি, ঐতিহ্য, ত্বকের রং, জাতি এবং ধর্ম প্রভৃতি বিভিন্ন উপাদান যা আমাদেরকে প্রায়ই একে অপর থেকে আলাদা করে দেয়। এসব ভিন্নতা সত্ত্বেও আসল কথা হচ্ছে আমরা সবাই একই রক্ত দিয়ে গড়া এবং একই বাতাসকে গ্রহণ করি। আমি মনে করি, আমাদের প্রত্যেকেরই উচিৎ দৈনন্দিন জীবনে এই বিষয়টি মনে রাখা।
আমার মুসলিম হওয়া এবং আমার জীবনে এটি অন্তর্ভুক্ত করা সহজ কাজ ছিল না। এটা অত্যন্ত কঠিন এবং প্রতিদিনই আমাকে আরো বেশি জানতে, শিখতে হচ্ছে। মানুষ আমার ধর্মান্তরকে বিভিন্নভাবে বিচার করে, এমনকি মুসলিমরাও আমাকে বিচার করে।
একজন মুসলিম হওয়ায় আমার ধৈর্য পরীক্ষা করা হয়েছে। কিন্তু সঠিক পথ কখনোই সহজ নয় এবং এটি আমার জন্য কঠিন সময় সত্ত্বেও, এটি আমার হৃদয়ে এবং আমার জীবনে অবিশ্বাস্য শান্তির অনুভূতি নিয়ে এসেছে। এটি এমন এক শান্তি; যা অন্য কোনো উপায়ে পাওয়া সম্ভব হবে না। এটি আমাকে খুশি করে, এটি আমাকে কাঁদায় এবং এটি আমাকে জীবন, সমাজ ও দুনিয়া সম্পর্কে অনেক প্রশ্নের জবাব দেয়।
সবশেষে আমি বলতে পারি যে, আল্লাহ’র মাধ্যমে আমি অবলম্বন খুঁজে পেয়েছি এবং আল্লাহর জন্য আমার নিজেকে ঢেকে রাখার বিষয়টি আমার কাছে কোনো সমস্যাই মনে হয় না। সালাত আদায় করার সময়ে আমার নিজেকে কখনো একা মনে হয় না, মনে হয় সৃষ্টিকর্তা সবসময়ই আমার সঙ্গেই রয়েছে। ‘নিশ্চয়ই প্রত্যেক কষ্টের বিপরীতে সুখ রয়েছে’ (সূরা: আল ইনশিরাহ ৯৪:৬)।
হ্যাঁ, আমি একজন মুসলিম। আমি একজন অস্ট্রেলিয়ানও। আমি একজন সাংবাদিক এবং আমি একজন ভ্রমণকারীও। একজন মুসলিম হওয়ার কারণে একজন ব্যক্তিকে পরিণত মানুষ হওয়ার জন্য তার প্রয়োজনীয় উপাদানগুলোকে পরিবর্তন করে না।
লেখক পরিচিতি: সারা প্রাইস অস্ট্রেলিয়ার মোনাশ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জার্নালিজম বিষয়ে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। পরে তিনি মালয়েশিয়া এবং মেলবোর্নে ইন্টার্নি করেছেন। ২০১৪ সালে তিনি ইসলামে ধর্মান্তরিত হন। ইয়াহু অবলম্বনে