'যারা মনেপ্রাণে ইসলামকে ধারণ করবে তারা কখনও জঙ্গি হতে পারে না'

বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, মাদ্রাসায় অধ্যয়ন করে যারা মনেপ্রাণে ইসলামকে ধারণ করবে তারা কখনও জঙ্গি হতে পারে না। এদেশের মানুষ ধর্মভীরু হলেও তারা জঙ্গিবাদকে কখনও মেনে নেবে না।

 

বার্তা সংস্থা ইকনা: আজ (শনিবার) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মাদ্রাসার শিক্ষক-কর্মচারীদের এক সমাবেশে যোগ দিয়ে এ কথা বলেন তিনি। মাদ্রাসা শিক্ষাকে জাতীয়করণের দাবিতে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীন আয়োজিত আলিয়া মাদ্রাসা শিক্ষকদের সমাবেশে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদও বলেছেন, "মাদ্রাসা জঙ্গিবাদের কারখানা নয়। দেশকে ধ্বংস করতে অনেকে ইসলামের নামে অপপ্রচার চালিয়ে আমাদের সন্তানকে জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িয়ে ফেলছে। এ বিষয়ে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। আমাদের সন্তানদের জঙ্গিবাদের সহিংস কর্মকাণ্ড থেকে রক্ষা করতে হবে।"

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে ইসলামি শিক্ষার সর্বোচ্চ উন্নয়ন ও আধুনিকায়ন হয়েছে, যা বিগত সরকারের আমলে হয়নি।

তিনি বলেন, মাদ্রাসা শিক্ষার উন্নয়নে মাদ্রাসা অধিদফতর তৈরি করা হয়েছে। এ শিক্ষায় অনার্স কোর্স চালু করা হয়েছে। ৩০ একর জমির উপর ৪১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে। সাধারণ বিষয়ের মতো আইসিটি ও বিজ্ঞান বিষয় চালু করা হয়েছে।

'আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে ইসলাম ধ্বংস হয়ে যাবে' – এ কথাকে অপপ্রচার হিসেবে উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী মাদ্রাসা শিক্ষকদের অধিক গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। এ কারণে তিনি ঘোষণা দিয়েছেন যে, দেশে কুরআন-হাদিসের পরিপন্থি কোনো আইন প্রতিষ্ঠা হবে না।

শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, প্রতি বছর মেধা ও সাধারণ কোটায় সাড়ে সাত হাজার মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দেয়া হচ্ছে। কওমি মাদ্রাসাকে সরকার স্বীকৃতি দিয়েছে। এছাড়া, অতি দ্রুত জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের দাবিগুলো বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করা হবে বলেও আশ্বস্ত করেন শিক্ষামন্ত্রী।

মাদ্রাসা শিক্ষকদের হতাশ না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, "প্রধানমন্ত্রী সব সময় মাদ্রাসা ও ইসলাম শিক্ষার প্রতি আন্তরিক। যার দৃষ্টান্ত আপনারা অতীতে পেয়েছেন আগামীতেও পাবেন। আমি গোনাহগার বান্দা। কিন্তু ভাগ্যবান। কারণ দেশের বিপুল সংখ্যা আলেম সমাজের সঙ্গে চলাফেরা করি।"

সংগঠনের পক্ষ থেকে মাদ্রাসা শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরি জাতীয়করণ, শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরির বয়সমীমা ৬৫ বছর, শিক্ষার্থী সংকট দূরীকরণে সংযুক্ত ও স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসাকে প্রাইমারি স্কুলের মতো জাতীয়করণে আওতাভুক্ত, উপবৃত্তি ও টিফিনের ব্যবস্থা এবং নতুন ইবতেদায়ি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা, শিক্ষক সংকট দূরীকরণে জমিয়াতুল মোদার্রেছীন কর্তৃক জনবল কাঠানো অনুমোদন ও মাদ্রাসার সহকারী মৌলভীদের বেতন বৈষম্য দূরীকরণের দাবি জানানো হয়।

সংগঠনের সভাপতি ও দৈনিক ইনকিলাব সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মহাসম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি উন্নয়ন বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলী। পার্সটুডে